ফুল বাগানের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা ( Flower garden planning and management)
ফুল বাগানের পরিকল্পনা
ও ব্যবস্থাপনা
বাগানের পরিকল্পনা
একটি শৈল্পিক বিষয় । বাগান তৈরির আগে এর মাটি, ভূমির অবস্থান, পানির উৎস, যাতায়াত ব্যবস্থা
ইত্যাদি সম্বন্ধে একটি সম্যক ধারণা থাকা উচিত। এজন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি দারুন নকশা।
নকশায় বাগানের প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
বাগানের স্থান ও মাটি নির্বাচনঃ
বাগানের স্থান নির্বাচনঃ
বাগানের স্থান
নির্বাচনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অপরিহাযঃ
·
আলো
বাতাস পাবার সুবিধার্থে দক্ষিণ দিক সংলগ্ন জায়গায় যা বসতবাড়ির সামনে অবস্থিত এমন জমি
বেছে নেয়া উচিত। দক্ষিণ দিকে সম্ভব না হলে যথাক্রমে পূব ও পশ্চিম দিক বাছাই করতে হবে।
কোন অবস্থাতেই উত্তর দিকে বাগান করা যাবেনা ।
·
বাগানের
উঁচু জমি যাতে বৃষ্টি বা বন্যাব কারণে জলমগ্ন হয়ে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পানি
নিষ্কাশনের সুবিধার্থে জমি মোটামুটি সমতল এবং একদিকে কিছু পরিমাণ ঢালু থাকা বাঞ্ছনীয়।
·
দূষণমুক্ত
প্রাকৃতিক পরিবেশ বিদ্যমান এমন একটি জায়গা বাগানের জন্য নির্বাচন করা উচিত।
·
বাগানের
জন্য নির্বাচিত জমি স্যাঁতসেঁতে হবে না।
·
সেচেরর
সুবিধার্থের বাগানের জমির কাছাকাছি জায়গায় পানির উৎস থাকতে হবে।
·
বাণিজ্যিক
ফুল উৎপাদনের জন্য বাগানের জমির অবস্থান চারপাশের জমি হতে উঁচু হতে হবে। ফুল বাজারজাতকরণের
সুবিধার্থে ভাল রাস্তাঘাট, বাজার থাকলে ভালো।
মাটি নির্বাচনঃ
ফুল
চাষের জন্য মাটি যথেষ্ট পরিমাণে উবর হতে হবে। তিনটি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান নাইট্রোজেন,
ফসফরাস, পটাশিয়াম মাটিতে সুষম মাত্রায় থাকতে হবে। এ ছাড়া মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা ভালো
থাকতে হবে। মাটির মাধ্য বাতাস যাতে সহজে চলাচল করতে পারে সেজন্য মাটির বুনট সেরকম থাকতে
হবে। জৈব সার সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটির এ সমস্ত গুণ রয়েছে বিধায় এটি ফুল বাগান করার জন্য
আদর্শ মাটি হিসেবে বিবেচিত। মাটি বেলে দোঁআশ হলে পচা গোবর, আবজনা পচা সার , পাতা পচা
সার , সবুজ সার ও চুন মিশিয়ে নিতে হবে। আর মাটি কিছুটা ভারি কাদাপ্রধান হলে বালি, আবজনা
সার ও পচা গোবর মিশিয়ে হালকা বুনটের করে গড়ে তুলতে হবে।
মাটির
অম্লক্ষারত্ব ফুল চাষের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূণ। প্রায় অধিকাংশ রকম ফুলগাছ সামান্য অম্ল
বা সসামান্য
সামান্য ক্ষার
মাটি পছন্দ করে। এজন্য বলা যায় ফুল চাষের জন্য মাটির পিএইচ ৬ থেকে ৭ হতে হবে। প্রয়োজনীয়
। ক্ষেত্রে অম্লত্ব কমাতে হবে। অম্লত্ব কমাতে চুন আর বাড়াতে সালফার প্রয়োগ
করতে হয়। মাটি হলো বাগানের প্রাণ। কারণ মাটির প্রকৃতি ও গঠনের উপর নিভর করে গাছের বৃদ্ধি।
তাই মাটির উর্বরতার দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।
ফুল বাগানের প্রকারভেদঃ
ফুল বাগানের নকশা বা ডিজাইনঃ
ফুল বাগান
বা উদ্যান তৈরি একটি শৈল্পিক বিষয়। বাগানে যখন ফুল ফুটে থাকে তখন বর্ণের বৈচিত্র্যে
এক অপরুপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয় । দু’পাশের গাছের সারির মধ্য দিয়ে পথ এঁকেবেঁকে চলেছে।
পুকুরের জলে হাঁস ভাসছে। হাওয়ায় সুমিষ্ট গন্ধ ভেসে আসছে, পূণিমার রাজ্যে বাগান স্বপ্নরাজ্য বলে মনে হয়
। এলোপাথারি ও পরিকল্পনাহীনভাবে বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফুল গাছ লাগিয়ে বাগান করলে এর সৌন্দয
লোপ পায়, ভূমির অপচয় হয় এবং পরিচর্যায় অসুবিধা হয়। তাই প্রধানত বাগানের নকশা তৈরি করে
তারপর গাছ লাগানো উচিত। নকশা তৈরি করে বাগান করা হলে চলাচলের রাস্তা, লন, স্থায়ী গাছ,
ভূমির অবস্থা, জমির আয়তনের উপর ভিত্তি করে তৈরি সহজ হয়। এতে গাছের আকার আকৃতি ,মৌসুম
অনুযায়ী মৌসুমি ফুল ও স্থায়ী বাগান ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা যায় । বাগানে কখনও অপ্রয়োজনীয়
জিনিস লাগাতে নেই। বাগানের আয়তন অনুযায়ী যে কয়টি গাছ ভালভাবে লাগানো যেতে পারে কেবল
সে কয়টি গাছই লাগাতে হবে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সূর্যের আলো প্রাপ্তির সুবিধার্থে বাড়ির
আঙিনাকে পরিকল্পিতভাবে দক্ষিণ দিকে রাখতে হবে।
Wonderful lecture.. আমি এতে অনেক উপকৃত হয়েছি
ReplyDelete